বর্তমানের এই ডিজিটাল দুনিয়ায় কারো সাথে ভিডিও চ্যাট, অডিও কল অথবা টেক্সট মেসেজ করার জন্য আমরা নিয়মিতভাবে whatsapp ব্যবহার করে থাকি। এছাড়াও অনেক ছবি, কিংবা ভিডিও সঠিক সাইজ বা রেজুলেশনের অন্যের কাছে শেয়ার করার জন্যও আমরা whatsapp ব্যবহার করে থাকি। এক কথায় বলতে গেলে এটি আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যক্তিগত ব্যবহারের পাশাপাশি অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাজেও আমরা whatsapp ব্যবহার করি। এই গোটা বিশ্বে কোটি কোটি মানুষের একটি নির্ভরশীল প্ল্যাটফর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে এই হোয়াটসঅ্যাপ। আর যেহেতু বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ এই অ্যাপ্লিকেশনটি ব্যবহার করে থাকেন তাই এর নির্মাতা কোম্পানি মেটা ও চেষ্টা করে যাচ্ছে যে কিভাবে তাদের গ্রাহকদের তথ্যকে সুরক্ষিত রাখা যায়। তাই তারা তাদের অ্যাপ্লিকেশনটি কে গ্রাহকদের কাছে আরো বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য প্রতিনিয়ত নতুন নতুন নিয়ম কানুন প্রণয়ন করছে। আর যদি কোন ব্যবহারকারী এই নিয়মগুলো সঠিকভাবে মেনে না চলে তাহলে তারা সেই ব্যবহারকারীর একাউন্টটি কে নিষিদ্ধ করে দিচ্ছে। এখন আপনিও হয়তো নিজের অজান্তেই এমন কিছু করে ফেলতে পারেন যার কারণে আপনার অ্যাকাউন্টটিও নিষিদ্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই চলুন জেনে আসা যাক কি কি শর্ত অমান্য করলে হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ হয়ে যেতে পারে!
১. থার্ড পার্টি অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার
অনেকে whatsapp এর অফিসিয়াল মুল অ্যাপ ব্যবহার না করে আরো অতিরিক্ত কিছু সুবিধা পাওয়ার আশায় বিভিন্ন ধরনের থার্ড পার্টি অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে থাকেন আবার অনেকের ফোনে জায়গা না থাকাই তারা whatsapp এরই কিছু থার্ড পার্টি অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করেন যাতে মোবাইলে কম পরিমাণ জায়গা খায়। কিন্তু সত্যিকার অর্থে এ ধরনের অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করলে আপনার একাউন্ট আপনার অজান্তেই নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। এমনই কিছু এপ্লিকেশন হলঃ হোয়াটসঅ্যাপ ডেল্টা, জিবি হোয়াটসঅ্যাপ অথবা হোয়াটসঅ্যাপ প্লাস। আসলে এগুলো কোনটি হোয়াটসঅ্যাপের অফিসিয়াল application না। তাই কেউ যদি এ ধরনের অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আজ থেকে এগুলো ব্যবহার করা বাদ দিন।
২. অন্যের ছবি এবং নাম ব্যবহার করে একাউন্ট খোলা
আমাদের মধ্যে এক ধরনের প্রবণতা দেখা যায় যে ফেক অ্যাকাউন্ট খোলার। অর্থাৎ কেউ একটা ছেলে মানুষ, সে একটা মেয়ে মানুষের নামে এবং ছবি দিয়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট খুলে কোন ছেলেমানুষের সাথে প্রতারণা করতে পারে। তাই এ ধরনের একাউন্ট whatsapp বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই আপনি যদি অন্য কারোর নাম, প্রোফাইল কিংবা পরিচয় দিয়ে কোন whatsapp account খুলে থাকেন আর হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ সেটা ধরতে পারে তাহলে সাথে সাথেই আপনার ওই অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দিতে পারে। এমনকি আপনি যদি কোন সেলিব্রেটি মানুষের বা কোন সংস্থার ছদ্মবেশ ধরেও একাউন্ট চালান তাহলেও নিষিদ্ধ হয়ে যেতে পারে আপনার একাউন্টটি।
৩. প্রতারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা
আপনি যদি আপনার হোয়াটসঅ্যাপ একাউন্টের মাধ্যমে কোন প্রতারণামূলক কার্যক্রম বা ভুয়া কার্যক্রম অথবা মিথ্যা তথ্য ছড়ান তাহলে আপনার অ্যাকাউন্টটি ডিলিট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আপনারা মাঝে মাঝে দেখবেন কিছু লিংক শেয়ার করলে বা কোন ভিডিও শেয়ার করলে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ কিছুদিনের জন্য আপনার একাউন্টটি ব্লক করে দেয়, আসলে এভাবেই তারা বুঝতে পারে যে আপনি যে তথ্যটি শেয়ার করেছেন সেটা কোন প্রতারণা বা স্প্যামিং ঘটাতে পারে। এভাবে যদি দীর্ঘদিন চলতে থাকে তাহলে একসময় আপনার অ্যাকাউন্টটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হবে। আবার কেউ যদি ফিশিং সাইটের লিংক শেয়ার করে তাহলে তার একাউন্টে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হতে পারে।
৪. অপরিচিত ব্যক্তিকে বারবার মেসেজ করলে
আপনার কন্টাক্ট লিস্টে নাম নাই অথবা আপনি যাকে মেসেজ দিচ্ছেন তার কন্টাক্ট লিস্টেও আপনার নাম্বারটি সেভ করা নাই এমন কোন ব্যক্তিকে যদি আপনি বারবার মেসেজ দিয়ে থাকেন এবং সে ব্যক্তি যদি আপনার মেসেজের কোন রিপ্লাই দিয়ে না থাকে তাহলে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ বা whatsapp এর এলগরিদম এটাকে স্প্যামিং বলে ধারণা করে এবং তারা সেই একাউন্টটি কে বন্ধ করে দেয়।
৫. অবৈধ তথ্য শেয়ার করা
আপনি যদি কোন ব্যক্তিকে এমন তথ্য শেয়ার করে থাকেন যে তথ্যটা মিথ্যা কিংবা গুজব এমন তথ্য হলে আবার আপনি যদি এমন কোন কনটেন্ট শেয়ার করেন যেটা সহিংসতা পূর্ণ বা বিদ্বেষমূলক কিংবা কোন মানুষ বা ধর্মের বিরুদ্ধে ইঙ্গিত করে বোঝানো হচ্ছে তাহলে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ এ ধরনের অ্যাকাউন্ট কে বন্ধ করে দেয়। আবার আপনি যদি whatsapp এর মাধ্যমে পর্নোগ্রাফি বা এমন ধরনের অবৈধ কন্টেন্ট এবং আগ্নেয়াস্ত্র ইত্যাদি দেখানো কনটেন্ট শেয়ার করেন তাহলে আপনার অ্যাকাউন্টটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
৬. সরাসরি কাউকে হুমকি দিলে
আপনি যদি whatsapp এর মাধ্যমে কোন ব্যক্তিকে সরাসরি হুমকি দিয়ে থাকেন বা তাকে এমন কোন কথা সরাসরি ভাবে বলে থাকেন যেটার মাধ্যমে তার জীবনের ঝুঁকি ধরতে পারে তাহলে আপনার অ্যাকাউন্টটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও আপনি যদি হয়রানি বা বিদ্বেষমূলক মেসেজ দিয়ে থাকেন তাহলেও আপনার অ্যাকাউন্টটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
৭। বট মেসেজিং করা
আপনি যদি কোন ব্যক্তিকে মেসেজ বারবার পাঠাতে থাকেন তাহলে whatsapp এলগরিদম এটাকে স্প্যামিং বা বট মেসেজিং হিসেবে চিহ্নিত করে। আবার আপনি যদি কোন সফটওয়্যার এর মাধ্যমে বট মেসেজিং বা অটোমেটেড মেসেজ পাঠানোর চেষ্টা করে থাকেন তাহলে আপনার অ্যাকাউন্টটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
৮. একাধিক ব্যক্তি একাউন্টে রিপোর্ট করলে
কোন একাউন্ট এর বিরুদ্ধে যদি একাধিক োধ ব্যক্তি রিপোর্ট করে থাকে তাহলে whatsapp কর্তৃপক্ষ সেই অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে একটি অ্যাকশন নিতে বাধ্য থাকে। তাই আপনার একাউন্টের বিরুদ্ধে যদি অনেকগুলো রিপোর্ট আসে তাহলে হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ আপনার একাউন্টটি পর্যবেক্ষণ করে তারপরে সিদ্ধান্ত দিয়ে। যদি রিপোর্টের সংখ্যা অনেক বেশি থাকে তাহলে আপনার এখন কি নিষিদ্ধ হয়ে যেতে পারে।
এছাড়াও আরো বিভিন্ন কারণে আপনার একাউন্টটি নিষিদ্ধ হতে পারে। তবে উপরোক্ত কারণগুলোই মূলত বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই এর মধ্যে কোন একটি কারণ যদি আপনার একাউন্টে হয়ে থাকে তাহলে আজই সেটা পরিবর্তন করে সমাধানের চেষ্টা করুন। আশা করি লেখাটি আপনাদের ভালো লেগেছে। সবাইকে ধন্যবাদ।
The post যে নিয়মগুলো অমান্য করলে সাথে সাথে নিষিদ্ধ(Ban) হয়ে যেতে পারে whatsapp একাউন্ট । appeared first on Trickbd.com.
from Trickbd.com https://ift.tt/O6837bt
via IFTTT
No comments:
Post a Comment