• এসএসসি রেজাল্ট ২০১৯ । নাম্বার সহ এসএসসি, দাখিল ও ভোকেশনাল পরীক্ষার ফলাফল ২০১৯Breaking News

    Thursday, May 26, 2022

    New

    Hello what’s up guys কেমন আছেন সবাই ? আশা করি ভালো আছেন । সবাইকে স্বাগতম আজকের একটি নতুন পোস্টে । টাইটেল আর thumbnail দেখে already বুঝে গেছেন আজকের টপিক কি । তাই বেশি কথা না বলে আজকের পোষ্ট শুরু করা যাক
    ক্লান্তি
    মাহিদা রহমান শুচি
    রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ
    Sub-head of Linguistic department, Alate

    হাসিখুশি ষোড়শী আফরার জীবনটা হঠাৎ হতাশায় ভরে যাচ্ছে। জীবনকে অনেক
    সহজ করেই দেখতো সে। কিন্তু যতই বড় হচ্ছে জীবনটা ক্রমাগত কঠিন থেকে
    কঠিনতর হচ্ছে। চারপাশের পরিবেশ, মানুষগুলোও যেনো প্রতিনিয়ত বদলে
    যাচ্ছে। আফরা তেমন কিছুই চায়নি, শুধু চেয়েছিলো সবার মন রক্ষা করে
    চলতে। এসব করতে করতে মেয়েটা কখন যে নিজ সত্ত্বাকেই হারিয়ে
    ফেলেছিলো, টের-ই পায়নি। যতদিনে পেয়েছিলো ততদিনে হতাশা তাকে
    চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেছিলো এবং আরও আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরছিলো।
    আফরার জীবনের অন্যতম লক্ষ্য ছিলো বাবা-মায়ের স্বপ্নকে পূরণ করা। সে জন্য
    নিজের সব শখ, ভালো লাগাকে বিসর্জন দিয়েছিলো, বলি দিয়েছিলো নিজ
    স্বপ্নকে। বাবা-মায়ের স্বপ্নকেই নিজ লক্ষ্য হিসেবে ধরে নিয়ে, সবকিছু বাদ দিয়ে
    পড়াশোনায় মনোনিবেশ করেছিলো। কিন্তু এর ফলস্বরূপ ভালো ফলাফল
    পেয়েছিলো কি-না জানা নেই তবে সহপাঠীদের কাছে নিজের নামের সাথে
    আঁতেল উপাধি ঠিক ই পেয়েছিলো। একসময় তো বন্ধুমহলে টেকা দায় হয়ে
    গেলো। নামের সাথে কামলা, আবুল, ক্ষ্যাত ইত্যাদি বিশেষণ যোগ হতে
    লাগলো। একসময় অতিষ্ঠ হয়ে নিজের জীবনকে নতুনভাবে ঢেলে সাজালো আফরা।
    আধুনিকতার রঙ নিজের গায়ে মাখতে লাগলো। নতুন এক রঙিন দুনিয়ায় প্রবেশ
    করলো সে। এ দুনিয়ার ভেতর প্রবেশ করলে এর গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে
    যেতে থাকে মানুষ। এখানে নিজেকে ধরে রাখা অনেক কষ্ট হয় নবীনদের। প্রায়
    সবাই ই হোঁচট খায় একবারের জন্য হলেও। কেউ কেউ তো হোঁচটের পর হোঁচট
    খেলেও শিক্ষা পায় না। এই আধুনিক দুনিয়ার অন্যতম অংশ হলো সামাজিক
    যোগাযোগমাধ্যম। হোঁচট খেয়েছিলো আফরাও। দ্রুতই সে বান্ধবীদের
    প্ররোচনায়, তথাকথিত আধুনিক, প্রগতিশীল হওয়ার তাগিদে সামাজিক
    যোগাযোগমাধ্যম এর একজন সক্রিয় সদস্য হয়ে উঠেছিলো। সে এক অন্যরকম
    জগৎ, যার অভ্যন্তরে শুধু আনন্দ আর বিনোদন! কত নতুন মানুষ, বন্ধু-বান্ধব। এ
    জগতের আলোর রোশনাই এ চোখ যেনো ঝলসে উঠে। এ রাজ্যের বাইরে
    থাকলেও সারাটাদিন চোখে সে ঝলসানি লেগে থাকে। কখন আবার এ রঙিন
    রাজ্যে ডুব দেবে সেজন্য মন ব্যকুল থাকে। আফরার চোখ থেকে এ রঙিন
    জগতের ঠুলি সেদিন খুলেছিলো যেদিন সে জীবনে প্রথমবারের মতো কোনো
    পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছিলো। ক্লাসের প্রথম সারির এই শিক্ষার্থীর পড়াশোনার
    এত অবনতি দেখে শিক্ষকরা যেমন অবাক হয়েছিলো, অভিভাবকরা তেমনি ক্ষুব্ধ
    হয়েছিলো। ইতোমধ্যেই নিজের ফলাফল এর অবনতি দেখে ভীত আর দুঃখ-
    অনুতাপে ভোগা আফরার উপর দিয়ে সেদিন কী ঝড় বয়ে গিয়েছিলো তা শুধু সে
    এবং তার অভিভাবক ই জানে। ব্যাপারটা শুধু সেদিনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলো
    না। এরপরের কয়েক মাস তার উপর এই অকৃতকার্যতার জন্য বিভিন্ন ভাবে
    ছোটো-বড়ো বেশকিছু ঝটিকা বয়ে গিয়েছিলো। এ ঘটনা আফরার জীবনে
    আরেকটি নতুন মোড় নিয়ে আসে। অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে জীবনকে আবারও
    নতুনভাবে ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করে সে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা
    তথাকথিত আধুনিকতার যে পথে আফরা পা বাড়িয়েছিলো সেখানে অনেকটাই
    এগিয়ে গেছে সে, এখান থেকে ফিরে আসা তার জন্য অসম্ভব, কয়েকদিন এ জগৎ
    থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করে খুব ভালোভাবে তা বুঝতে পেরেছিলো সে। উপরন্তু
    সহপাঠীদের কাছে আগের মতো আঁতেলেকচুয়াল, ক্ষ্যাত এইসব শুনতে বা
    ছোটো হতে চায় না সে। বড়ই দুর্বিষহ সেই স্মৃতি! সেই দিনগুলো মনে পড়লে
    এখনও শিউরে উঠে আফরা। কী মানসিক যন্ত্রণা! নিজেকে কত ক্ষুদ্র, বোকা,
    অপাঙক্তেয় মনে হতো তখন! বন্ধুরা যখন কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করতো
    তার বেশিরভাগ ই বুঝতো না সে। যাদের নিয়ে কথা বলতো তাদের প্রায় সবাইই
    অচেনা। নিজেকে তখন ভিন গ্রহের কোনো প্রাণী মনে হতো। তাই এবার আফরা
    একসাথে সবার মন রেখে এগিয়ে চলার সিদ্ধান্ত নিলো। বন্ধু-বান্ধব, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, পড়াশোনা সবকিছু ঠিক রেখে চলার চেষ্টা করতে লাগলো।
    বন্ধু-বান্ধবদের মন রেখে চলাও অনেক কঠিন। তারা যেসব বিষয় নিয়ে কথা বলে
    সেসব বিষয়, যাদের ভক্ত তাদের ব্যাপারে জানতে হবে। সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া
    সব বিষয়ের খবর রাখতে হবে, সেসব নিয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে হবে।
    তাদের সাথে প্রায়ই বাইরে ঘুরতে যেতে হবে, খেতে যেতে হবে, বাস্তবজীবনের
    পাশাপাশি সোস্যাল মিডিয়ায়ও তাদের সময় দিতে হবে, আরও কত কী! এসব
    সামলে চলা সহজ নয়। তারপরও নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করতে লাগলো
    আফরা। আর পড়াশোনার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার,
    নিজের আধুনিকায়নও চালিয়ে যেতে লাগলো। তবে এর জন্য অনেক হিমশিম
    খেতে হচ্ছিলো তাকে। বাবা-মায়ের তীব্র নজরদারির মাঝে এগুলো করা
    রীতিমতো একেকটা যুদ্ধাবিজানের মতো। নিজের কী শখ ছিলো প্রায় ভুলেই
    গিয়েছে আফরা। স্বপ্ন দেখাও ছেড়ে দিয়েছে সে। যন্ত্রের মতো চোখমুখ বুজে
    প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে, আর যাই হোক ভালো ফলাফল করতে
    হবে। পড়াশোনা ছাড়া, ভালো ফলাফল ছাড়া জীবনে কিছুতেই সফল হওয়া যাবে
    না ছোটোবেলা থেকে এটাই জেনে আসছে সে। পড়াশোনায় ভালো না করলে সে
    জীবন পুরোই ব্যর্থ, মূল্যহীন একথা ওর পিতা-মাতা ওকে খুব ভালোভাবেই
    বুঝিয়ে দিয়েছিলো। তাই পড়াশোনাকে সে সবার আগে রেখে এর মাঝে অবসর
    বা সুযোগ পেলেই অভ্যেস অনুযায়ী তার রঙিন দুনিয়ায় ডুব দেওয়া, বন্ধুদের সময়
    দেওয়া, সম্প্রতি সব বিষয়ের খবর রাখা, আধুনিকায়ন সব চালিয়ে যেতে
    লাগলো। কিন্তু এসবের মাঝে আফরা নিজেকে নিজে সময় দিতেই ভুলে গেলো।
    জীবন ব্যস্ততায় ভরে গেলো। একের পর এক কাজ করে নিজেকে দিনশেষে
    অনেক ক্লান্ত মনে হতো। এসবে শারীরিক পরিশ্রম নেই ঠিক ই, কিন্তু মানসিক
    পরিশ্রম হয় প্রচুর। আর মানসিক পরিশ্রম মানুষকে শারীরিক পরিশ্রম এর চেয়েও
    বেশি ক্লান্ত করতে পারে। কিন্তু এ ক্লান্তিকে উপেক্ষা করে যেতো আফরা। সব দিক
    ঠিক রেখে এগোচ্ছে এতেই খুশি ছিলো সে।
    কিন্তু জীবনের আসল মানে এখনও বোঝা বাকি ছিলো আফরার। অনেক বড়
    একটি ধাক্কা অপেক্ষা করছিলো তার জন্য। নিজের বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়ে যখন
    সে অনেক স্বপ্ন নিয়ে জাতীয় একটি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলো তখন সে
    বুঝেছিলো সে কতটা পিছিয়ে আছে, বুঝেছিলো চারপাশে কত মেধা আর
    প্রতিযোগিতা। সে তুলনায় সে কিছুই না। এলাকাভিত্তিক এবং জাতীয় কয়েকটা
    প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিযোগিতা, পরীক্ষায় পরপর ব্যর্থতার পর নিজেকে আবার অনেক
    ক্ষুদ্র মনে হতে শুরু করলো আফরার। সে উপলব্ধি করলো নিজ বিদ্যালয়েও সে
    একেবারে সামনের শ্রেণির নয়, বর্তমানে মাঝামাঝি অবস্থানে রয়েছে আর জাতীয় পর্যায়ে তো সে স্থান ই পাচ্ছে না। চারপাশে যে প্রতিযোগিতা এ অবস্থানে থেকে
    ভবিষ্যতে খুব ভালো কিছু করার সম্ভাবনা নেই। তার কাঙ্ক্ষিত ফলাফল এর জন্য
    সবকিছু বাদ দিয়ে পড়াশোনায় ডুবে থাকা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। এদিকে
    যেটির জন্য নিজেকে পড়াশোনার মাঝে সপে দেয়নি, সে আধুনিকতাও পূর্ণভাবে
    তাকে ধরা দেয়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু ছেলে-মেয়ের আধুনিকতা
    দেখলে হীনম্মন্যতায় ভোগা শুরু করে আফরা। সে বুঝতে পারে এদের মতো সে
    কখনোই হতে পারবে না। তারা যেসব প্রসাধনী ব্যবহার করে এসবের আফরা
    এখনও নামও জানেনা। এছাড়া এসবের পেছনে সময় দেওয়ার মতো অত সময়
    বা সুযোগ কোনোটাই তার নেই। আর অনেকে আধুনিকতার নামে যে উগ্রতা
    প্রদর্শন করে, সেরকম আধুনিক সে হতেও চায় না। নিজেকে তাই এখন আংশিক
    আধুনিক মনে হয় তার। পড়াশোনা, আধুনিকতা দুটোকে একসাথে ধরতে যেয়ে
    কোনোটাকেই যেনো জয় করতে পারছে না সে। বরং এই যুদ্ধের মাঝে নিজেকেই
    হারিয়ে ফেলছে। এসব নিয়ে যখন আফরা হতাশায় ডুবে যাচ্ছিলো তখন বুঝতে
    পারলো, যে বন্ধুদের মন জয় করার জন্য তার এত প্রচেষ্টা এ দুঃসময়ে তাকে
    মানসিক সহায়তা দেওয়ার জন্য তাদের কেউই নেই। এবার সত্যি সত্যিই
    নিজেকে অনেক ক্লান্ত মনে হতে লাগলো আফরার। অনেক ক্লান্ত, মহা পরিশ্রান্ত।
    নিজের জীবনের প্রতিই ক্লান্তি চলে আসলো তার। এত পরিশ্রম করেও
    কোনোটাতেই সফল হতে পারলো না, কারও মন-ই জয় করতে পারলো না।
    আধুনিক হতে পারেনি, পিতা-মাতাকেও সন্তুষ্ট করতে পারেনি, সত্যিকারের বন্ধুও
    লাভ করতে পারেনি। নিজের জীবনটাকে সম্পূর্ণ ব্যর্থ আর অর্থহীন মনে হলো
    তার। একসময় মনে হলো এ মহাক্লান্তি দূর করার একটাই উপায়, তা হলো ঘুম,
    মহাঘুম, চিরনিদ্রা!
    তাই আর কিছু না ভেবেই একটা চিঠি লিখে দাদার ঘুমের ঔষধ এর পাতাটা
    লুকিয়ে নিয়ে এসে সবগুলো একসাথে খেয়ে নিয়ে মহাঘুমের ব্যবস্থা করে ফেললো
    আফরা। কিন্তু এ কাজেও ব্যর্থ হলো মেয়েটি। হাসপাতালের বিছানায় কয়েকদিন
    পর তার ঘুম ভাঙলো । তবে এর ফলে লাভই হলো। মানুষের কাছে তার জীবনের
    গুরুত্ব বুঝতে পারলো। কিছু সত্যিকারের বন্ধুরও পরিচয় পেলো যারা ঘুমন্ত
    আফরাকে দেখে কেঁদে বুক ভাসিয়েছিলো আর সদ্য জাগ্রত আফরাকে অনেক
    বকে দিলো, ভবিষ্যতে এমন কিছু করলে খবর আছে বলে হুমকিও দিলো। এর
    পাশাপাশি তারা সবসময় সব পরিস্থিতিতে আফরার পাশে আছে বলে আশ্বস্তও
    করলো। নিজেকে আগের মতো আর ব্যর্থ, ক্ষুদ্র, মূল্যহীন মনে হলো না
    আফরার । হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে শুয়ে সে নতুনভাবে ফিরে পাওয়া এ জীবন
    নিয়ে ভাবতে লাগলো। এবং এবার সে জীবনের আসল মানে বুঝতেও পারলো। জীবনটা তার নিজের সুতরাং এ জীবনকে তার নিজের মতো করে বাঁচতে হবে,
    নিজের মতো করে ঢেলে সাজাতে হবে। অন্যের মন রক্ষার জন্য অনাকাঙ্ক্ষিত
    জিনিস দিয়ে জীবনকে সাজালে অন্যের মন বা সফলতা কোনোটাই পাওয়া যায়
    না। নিজেকে, নিজের জীবনকে, চাওয়া-পাওয়াকে ভালোবাসলে, গুরুত্ব দিলে,
    সম্মান করলে অন্যরাও তা করবে। সফলতাও ধরা দিতে বাধ্য হবে। এবার থেকে
    সে অন্যের মন জয়ের জন্য নয়, নিজের জন্য বাঁচার সিদ্ধান্ত নিলো ।

    তো আজকে এই পর্যন্তই । আশা করি পোস্টটি সবার ভালো লেগেছে । কোনো কিছু না বুঝতে পারলে কমেন্টে জানান । আর যেকোনো প্রয়োজনে ফেসবুকে আমি

    The post [ধামাকা পোষ্ট] পড়ে নিন অনন্ত বিষাদগাথা বইটির চতুর্থ গল্প (ক্লান্তি) appeared first on Trickbd.com.



    from Trickbd.com https://ift.tt/W4pEvUs
    via IFTTT

    No comments:

    Post a Comment

    Fashion

    Beauty

    Travel