প্রবাসী ভাইদের সুবিধার জন্য বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো অধিদপ্তর আমি প্রবাসী নামক একটি ডিজিটাল প্লাটফর্ম তৈরি করে। এই প্লাটফর্ম মূলত অ্যান্ড্রয়েড এবং আইফোন এর জন্য তৈরি করা হয়। এটিতে বিদেশগামী বা বিদেশে কর্মরত সকল প্রবাসীরা রেজিষ্ট্রেশন বা নিবন্ধন করে এর বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। এছাড়াও বর্তমানে আপনি যদি বিদেশে যেতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই আমি প্রবাসী অ্যাপে নিবন্ধন করতে হবে। আমি এর আগে আপনাদের দেখিয়েছি যে কিভাবে আপনি নিজে নিজে আমি প্রবাসী অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধন করবেন। যদি আপনি মিস করে থাকেন তাহলে নিচে থেকে দেখে নিতে পারেন। এখন কথা হচ্ছে আপনি এই আমি প্রবাসী অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধন করে কি কি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবেন বা আপনার কী উপকারে আসবে তা নিয়েই আমরা আজকের এই টপিকে আলোচনা করব। এছাড়াও অনেকেই জানতে চেয়েছেন যে এটি আসলে কী, এটি আমাদের কী কাজে আসবে। তাই আপনাদের উদ্দেশ্যে বলবো পুরো টপিকটি ভালো করে পড়ে নিন তাহলেই আপনার প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
(বিদেশ যেতে চাইলে BMET বা আমি প্রবাসী অ্যাপে নিবন্ধন করে নিন।)
BMET তে নিবন্ধনঃ
বিদেশ যাওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে একজন বিদেশগামীকে অবশ্যই বিএমইটি তে রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধন করতে হবে। যদিও এটি আগে একজন বিদেশগামী যখন বিএমইটি অফিসে গিয়ে ফিঙ্গার দিয়ে আসতেন তখনই নিবন্ধন করা হতো। যা এখন আপনি নিজেই এই অ্যাপের মাধ্যমে সঠিকভাবে সকল তথ্য দিয়ে নিবন্ধন করতে পারবেন। এতে করে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
করোনা ভ্যাকসিনের জন্য অগ্রাধিকারঃ
বিদেশ যাওয়ার জন্য করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণ করা আবশ্যক। করোনা ভ্যাকসিনের জন্য আবেদন করার কয়েকটি পদ্ধতি রয়েছে আইডি কার্ড, জন্ম নিবন্ধন ও পাসপোর্ট দিয়ে। যারা বিদেশগামী তারা করোনা ভ্যাকসিনের জন্য যদি পাসপোর্ট দিয়ে আবেদন করেন তাহলে আবদনের প্রক্রিয়া দ্রুততার সাথে কাজ করবে। তবে এর জন্য আপনাকে আগে আমি প্রবাসী অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে অন্যথায় আপনি পাসপোর্ট দিয়ে করোনা ভ্যাকসিনের জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
চাকরির খোঁজঃ
সাধারণত আমরা দেখে থাকি বাংলাদেশে বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি চাকুরি খোঁজার বিভিন্ন ওয়েবসাইট বা প্লাটফর্ম রয়েছে। কিন্তু বিদেশ যাওয়ার জন্য বা বিদেশে চাকুরি খোঁজার জন্য এইরকম কোন প্লাটফর্ম বা ওয়েবসাইট নেই। আমাদের বিদেশ যেতে হলে দালালের মাধ্যমে যেতে হয়। কারণ আমরা নিজেরা চাকুরি খুঁজে না পাওয়ার কারণে। আর এই দালাল ছাড়া বিদেশে যদি আপনি যেতে চান তাহলে আমি প্রবাসী অ্যাপের মাধ্যমে আপনি নিজে বিদেশে চাকুরি খুঁজে যেতে পারবেন।
ফ্রি ট্রেনিং কোর্সঃ
সরকারি এবং বেসরকারি বিভিন্ন ফ্রি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে যেগুলিতে আপনি চাইলে বিভিন্ন বিষয়ের উপর ফ্রিতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারেন। কিন্তু আপনি ফ্রি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা সম্পর্কে কোথাও থেকে না জানার কারণে তা গ্রহণ করতে পারেন না। তাই আপনার যদি এই আমি প্রবাসী অ্যাপ থাকে তাহলে এটির মাধ্যমে আপনি সহজেই কোন কেন্দ্রে, কোন সময়ে, কোথায়, কোন বিষয়ে ফ্রি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে তা সহজে জানতে পারবেন এবং ফ্রিতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে পারবেন।
প্রি-ডিপার্চার ওরিয়েন্টেশনঃ
আপনি যদি বিদেশ যেতে চান তাহলে বাধ্যতামূলক আপনাকে তিনদিনের একটি ট্রেনিং বা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে যা নিজনিজ জেলা থেকে গ্রহণ করতে হয়। যার জন্য আগে নিজ জেলার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে ভর্তি হয়ে তারপর সেখানে তিন দিনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে সার্টিফিকেট বা সনদ গ্রহণ করতে হতো। কিন্তু আপনি এখন থেকে এই আমি প্রবাসী অ্যাপের মাধ্যমে বিদেশ যাওয়ার পূর্বে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য আপনার পছন্দমতো বুকিং নিতে পারবেন।
ব্র্যাক পরিষেবাঃ
ব্যবহারকারীগণ ব্র্যাক কর্তৃক প্রকাশিত চাকরির বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন ও ট্রেনিং সেশনে ভর্তি হতে পারবেন। পাশাপাশি, প্রত্যাগত অভিবাসীদের জন্য ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামে রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব হবে।
পাসপোর্ট অফিসঃ
বাংলাদেশের কোথায় কোথায় পাসপোর্ট অফিস রয়েছে সেগুলো ঠিকানাসহ জানতে পারবেন এবং আপনার নিকটবর্তী কোন পাসপোর্ট অফিসটি আছে সেটিও জানতে পারবেন এই অ্যাপের মাধ্যমে।
রিক্রুটিং এজেন্সি অফিসঃ
আপনাকে বিদেশ যেতে হলে অবশ্যই কোনো না কোন এজেন্সির মাধ্যমে যেতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে অনেক এজেন্সি রয়েছে যেগুলোর মধ্যে অনেকগুলো আছে যেগুলো সরকারি নিবন্ধনভুক্ত নয়। যার কারণে এগুলোর মাধ্যমে কাজ করানোটা একটা ঝুঁকি। কারণ এরা অন্য নিবন্ধিত এজেন্সির মাধ্যমে কাজ করে থাকে। এছাড়াও এদের সাথে আপনি কাজ করলে আপনার টাকা নিয়ে লাপাত্তা হওয়ার ঝুঁকি থাকে বেশি। তাই আপনি যেকোনো এজেন্সির সাথে কাজ করতে যান না কেন আপনি চাইলে এই আমি প্রবাসী অ্যাপের মাধ্যমে এজেন্সির নাম দিয়ে যাচাই করে নিতে পারবেন যে এই এজেন্সিটি কি বৈধ বা নিবন্ধিত কিনা।
জেলা জনশক্তি অফিসঃ
আপনার জেলার জনশক্তি অফিস সম্পর্কে এই আমি প্রবাসী অ্যাপে জানতে পারবেন। যেখানে মূলত আপনি বিদেশ যাওয়ার পূর্বে আপনার আঙ্গুলের ছাপ দিবেন এবং BMET স্মার্টকার্ড গ্রহণ করতে পারবেন। এছাড়াও এখান থেকে আরো অন্যান্য যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদন করতে পারবেন। যেগুলো মূলত দালাল বা এজেন্সি করে থাকে।
মেডিকেল সেন্টারঃ
বিদেশ যেতে হলে আগে অবশ্যই আপনাকে মেডিকেল টেস্ট করতে হবে। সেখানে যদি মেডিকেল টেস্টের ফলাফল পজেটিভ হয় তাহলেই আপনি বিদেশ যেতে পারবেন। আর তাই আপনি কোন মেডিকেল সেন্টারে এবং আপনার নিকটস্থ কোন মেডিকেল সেন্টারটি আছে তা এই আমি প্রবাসী অ্যাপের মাধ্যমে জানতে পারবেন।
দূতাবাস বা মিশনঃ
আপনারা যারা বিদেশে কর্মরত আছেন তাদের যদি দূতাবাসের সাথে কোনো রকম কাজ করার প্রয়োজন পড়ে তাহলে আপনি চাইলে এই আমি প্রবাসী অ্যাপের মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনো দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস সম্পর্কে জানতে পারবেন। যেখানে নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর ও ইমেইল অ্যাড্রেস থাকবে।
দেশভিত্তিক নিয়মকানুনঃ
কোন দেশে যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে, কত টাকা লাগে সবকিছু আপনি এই আমি প্রবাসী অ্যাপের মাধ্যমে জানতে পারবেন। এখান থেকে আপনি যে দেশে যেতে চান সে দেশের বিস্তারিত বিষয় জানতে পারবেন। যে সে দেশে কি কাজের জন্য নিবে, কত টাকা লাগবে, কি কি কাগজপত্র লাগবে ইত্যাদি।
সরাসরি যোগাযোগঃ
বিদেশ যাওয়া সংক্রান্ত কোনো বিষয় নিয়ে যদি কোনো সমস্যার সম্মুখীন হন। তাহলে সরাসরি এই আমি প্রবাসী অ্যাপের মাধ্যমেই যোগাযোগ করতে পারবেন। সরাসরি যোগাযোগ করার জন্য আমাদের জানান অপশনের মাধ্যমে আপনি সরাসরি তাদের সাথে কথা বলতে পারবেন। তারা আপনাকে এখানে আপনার সমস্যার ব্যাপারে রিপ্লাই দিবে অথবা আপনান মেইলে রিপ্লাই দিবে।
বিদেশযাত্রার চেকলিস্টঃ
আপনি যদি বিদেশে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে চান অর্থাৎ বিদেশের ব্যাপারে আপনি একদম নতুন বা অজ্ঞ কিছুই জানেন না। তাহলে আপনি এই আমি প্রবাসী অ্যাপের মাধ্যমে বিস্তারিত জেনে নিতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে আমি প্রবাসী অ্যাপের বিদেশযাত্রার চেকলিস্ট অপশনের দারস্থ হতে হবে। সেখানে প্রবেশ করার পর আপনি দেখতে পারবেন যে বিদেশ যেতে আপনার কি কি কাগজপত্রের প্রয়োজন, কোথায় কোথায় যেতে হবে, কি কি করতে হবে ইত্যাদি।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংরক্ষণঃ
আপনি যদি আমি প্রবাসী অ্যাপে নিবন্ধন করেন তাহলে এটিতে আপনি বিদেশ যাওয়ার জন্য আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংরক্ষণ করে রাখতে পারবেন। যেমন ধরেন আপনার পাসপোর্ট, ভিসা, ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট, চাকরির অনুমতিপত্র, ইন্সুরেন্স, আইডি কার্ড, সিভি, অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট, প্রশিক্ষণের সার্টিফিকেট ও ছবি সহ ইত্যাদি।
এইরকম আরো অনেক ধরনের সেবা বা সুযোগ-সুবিধা অথবা উপকারিতা পাবেন আপনি এই আমি প্রবাসী অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধন করার মাধ্যমে। তাই আমি বলব আপনি যদি বিদেশে যেতে চান অর্থাৎ আপনার বিদেশ যাওয়ার ইচ্ছা থাকে তাহলে আপনাকে আবশ্যক এই অ্যাপটিতে রেজিষ্ট্রেশন বা নিবন্ধন করতে হবে এবং এর সুযোগসুবিধাগুলি কাজে লাগাতে হবে। এছাড়াও সামনে আরো কিছু সুযোগ-সুবিধা এই অ্যাপটিতে যুক্ত হতে যাচ্ছে যার মাধ্যমে আপনি আরও অনেক উপকৃত হবেন।
সামনে যেসকল সুবিধাগুলি আসতেছেঃ
আমি প্রবাসী অ্যাপে সামনে আরও বেশকিছু সুবিধা যুক্ত হতে যাচ্ছে। সুবিধাগুলি হচ্ছে কল্যাণ তহবিল, বিএমইটি ক্লিয়ারেন্স, অ্যাপয়েন্টমেন্ট,গন্তব্যে পৌছানোর পর সেবা ইত্যাদি। এই ফাংশনগুলি যুক্ত হওয়ার পর একজন প্রবাসীর বিদেশের যাবতীয় বিষয়বস্তু পরিপূর্ণতা লাভ করবে।
আপনাদের সুবিধার্থে আমি আমার টিপস এন্ড ট্রিকসগুলি ভিডিও আকারে শেয়ার করার জন্য একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করেছি। আশা করি চ্যানেলটি Subscribe করবেন।
সৌজন্যে : বাংলাদেশের জনপ্রিয় এবং বর্তমান সময়ের বাংলা ভাষায় সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ক টিউটোরিয়াল সাইট – www.TutorialBD71.blogspot.com নিত্যনতুন বিভিন্ন বিষয়ে টিউটোরিয়াল পেতে সাইটটিতে সবসময় ভিজিট করুন।
The post BMET বা আমি প্রবাসী অ্যাপে নিবন্ধন করার উপকারিতা বা সুযোগ-সুবিধা বিস্তারিত। appeared first on Trickbd.com.
from Trickbd.com https://ift.tt/dYAnvHb
via IFTTT
No comments:
Post a Comment