জুমার দিন সিংহাসনে বসে আছেন উসমানী সালফানাদের ৩৪ তম সুলতান ও খলিফাতুল মুসলিমীন সুলতান দ্বিতীয় আবদুল হামিদ খান। তার হাতে শাহী লাঠি পরনে রাজকীয় পোশাক সামনে দাঁড়িয়ে আছেন, তার সবচাইতে বিশ্বস্ত তাহাসিন পাশা।
শুক্রবার সালফানতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আশা আবেদন পত্র গুলো তাহাসিন পাশা মহামান্য সুলতান কে পড়ে শোনান।
আজকেও বেশ কিছু আবেদন জমা হয়েছে।খুবই মনোযোগ সহকারে সুলতান সবগুলো চিঠি এবং নথিপত্র এর বিষয়বস্তু শুনছেন।
তার দৃষ্টি তীক্ষ্ণ।অনেক চিঠির মাঝে হঠাৎ তাহাসিন পাশা একটি চিঠি কে না পড়ে এড়িয়ে গেলেন। সুলতান আব্দুল হামিদের দৃষ্টি এড়ালো না বিষয়টি।
তিনি একটু অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, পাশা ওই চিঠিটা আপনি কেন পড়লেন না?
তাহসিন পাশা মাথা নিচু করে লজ্জিত ভঙ্গিতে বললেন-আমি লজ্জিত মহামান্য সুলতান। সুলতান দ্বিতীয় আব্দুল খান কে জিজ্ঞেস করলেন ( কেন?
তাফসিন পাশা ইতস্ত করে বললেন-ওই চিটিতে এক পাগল লোক দাবি করেছেন যে আপনি তার কাছে ঋণগ্রস্ত।
আমরা তাকে প্রাসাদে ডেকে কিছু অর্থ দিতে চেয়েছি, কিন্তু সে তা নেয়নি।
কিছুটা বিস্মিত হলেন সুলতান আব্দুল হামিদ। জিজ্ঞেস করলেন কোথায় সেই ব্যক্তি?
তাহসিন পাশা বললেন-এই প্রাসাদেই সে আছে সুলতান। সুলতান আব্দুল হামিদ আদেশ করলেন-(তাকে ডাকুন)
তাহাসিন পাসা লোকটিকে ভিতরে পাঠাতে বললেন, কিছুক্ষণ পর বিনীতভাবে একজন লোক কক্ষে প্রবেশ করলেন।লোকটির নাম মোঃ ফয়সাল- তাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে তার উপর দিয়ে বেশ দূর সময় অতিক্রম করছে।
কপাল থেকে ঘাম টপটপ করে ঝরে পড়ছে।
সে এসে দাঁড়ালো সুলতানের সামনে-লোকটিকে নির্দেশ দেয়া হলো তার কথাগুলো মহামান্য সুলতানকে জানানোর জন্য।
লোকটি বিনয় ভঙ্গিতে বলল-মহামান্য সুলতান আপনি আমার কাছে ঋণগ্রস্ত।
আবারো অবাক হয়ে গেলেন সুলতান আব্দুল হামিদ।
তাহাসিন পাশা চোখেও কৌতুহল।
সুলতান নরম সুরে জিজ্ঞেস করলেন-আমি কিভাবে তোমার কাছে ঋণগ্রস্ত?
লোকটি মাথা নিচু করে বলতে শুরু করলো। সুলতান আমি একজন ব্যবসায়ী, কিছুদিন আগে আমি ব্যবসায়ের লকশনের সমীক্ষণ হই।
এর ফলে আমার ব্যবসা সম্পূর্ণ শেষ হয়ে যায়, আমি পুরোপুরি দেউলিয়া হয়ে প্রচুর ঋণের কবলে পড়ে যাই।
এ পর্যন্ত বলার পর তাহসিন ভাষা সামান্য বিরক্তি হয়ে বললেন-মহামান্য সুলতান জিজ্ঞেস করেছেন সুলতান তোমার কাছে কিভাবে ঋণী?
ফয়সাল বলল-আমি এটাই বলছি। সুলতান মনোযোগ সহকারে তার দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রেখেছেন।
সে আবার বলতে শুরু করল-প্রচুর ঋণে ডুবে যাওয়ার পর আমি প্রতি রাতে আল্লাহর কাছে দোয়া করি যেন আল্লাহতালা আমার ঋণ থেকে উদ্ধার করেন।
এভাবে দোয়া করতে করতে গতকাল রাতে-আমি একটা স্বপ্ন দেখি, স্বপ্নে আমার রাসূল সাঃ এর দিদার নসিব হয়।
সুলতান আব্দুল হামিদ বুকে হাত রেখে দরুদ পড়লেন এবং কিছুটা বিস্মিত হয়ে তাকে কথা চালিয়ে যেতে বললেন।লোকটি এবার মাথা উচু করে সামান্য আনন্দের সাথে বলল-
স্বপ্নে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ইরশাদ করেছেন-আমার হামিদ কে গিয়ে বল সে প্রতি রাতে আমার প্রতি দুরুদ ও সালাত পাঠ করে।
কিন্তু গতকাল রাতে সে আমার প্রতি দুরুদ ও সালাত পাঠ করেনি।
যাও তোমার প্রয়োজনের কথা তাকে গিয়ে বল।
এটা সোনা মাত্রই সুলতানা আব্দুল হামিদ দাঁড়িয়ে গেলেন। তার শরীর কিছুটা কেপে উঠলো। তার হাতের লাঠির আঘাতে মাটিতে ঠকঠক আওয়াজ হলো।
সুলতান জেনো তার নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছেন না।সত্যি ই কি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই শব্দ ব্যবহার করেছেন?
যে রাসূলের প্রতি এত ভালোবাসা, এত সম্মান সেই রাসূল কি তাকে আমার হামিদ বলে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
সুলতান আব্দুল হামিদ স্তম্ভিত কন্ঠে বললেন-আবার বল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি বলেছেন?
ফয়সাল বলল-আমার হামিদ কে গিয়ে বলো।
এ পর্যন্ত বলতেই সুলতান তার হাত উঠিয়ে তাকে থামতে ইশারা করলেন।
দয়া থেকে একটি মুর্দা ভর্তি থলে বের করে তার হাতে দিয়ে বললেন। পুনরায় বলো তিনি কি বলেছেন?
ফয়সাল আবার বললো- আমার হামিদ কে গিয়ে বলো, সুলতান আগের মতই তাকে থামতে ইশারা করলেন এবং আরেকটি মুর্দা ভর্তি থলি তার হাতে দিলেন।
ফয়সাল আবারও উত্তর দিল-রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-আমার হামিদ কে গিয়ে বল।
সুলতান আবারও তাকে থামিয়ে তার হাতে মুদ্রা ভর্তি থলে দিলেন।
এরপর পুনরায় তাকে বলতে বললেন-ফয়সাল আবার বলল-আমার হামিদ কে গিয়ে বল।
সুলতান আরেকটি থলি তার হাতে দিলেন।তাহসিন পাষার চোখ গড়িয়ে ততক্ষণে অঝোর ধারায় পানি পড়ছে।
এতগুলো বছর তিনি সুলতানের পাশে আছেন। সারা জীবন তিনি নিজের পাশে থেকে রাসুলের প্রতি সুলতানের ভালবাসা দেখেছেন।
আজকে সেই ভালবাসার এমন স্বীকৃতি তা কেউ আবেগ আপ্লুত করেছে।
তিনি কাঁদতে কাঁদতে ফয়সাল কে বললেন এই অর্থ কি তোমার জন্য যথেষ্ট নয়?
ফয়সাল বলল অবশ্যই যথেষ্ট, আমি এটা দিয়ে খুব সহজেই আমার ঋণ শোধ করতে পারব।
লোকটা চলে গেল।তাহাসিন পাশা তখনও কাঁদছেন। তিনি বললেন সুলতান আপনি তো প্রায় সব অর্থই তাকে দিয়ে দিলেন?
সুলতান আব্দুল হামিদ অনুতাপদের স্বরে বললেন-এটা তুমি কি বলছো পাশা?
আল্লাহর কসম আমি তো আমার ধন-সম্পত্তি শুধু নয় বরং আমার সম্পূর্ণ সাম্রাজ্য তাকে দিয়ে দিতাম।
গতকাল রাতে আমি অনেক ক্লান্ত ছিলাম, দরুদ পাঠ করতে আমি ভুলে যাই আর ঘুমিয়ে পড়ি। অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে পাশা।
আল্লাহ আমায় ক্ষমা করুন। তারপর মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুখ থেকে আমার হামিদ কথাটি শুনতে পাওয়াই। আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন।
আমি নরমালি প্রত্যেকটা পোষ্টের নিচে কোন না কোন বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকি কিন্তু আমার রসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর নিয়ে পোস্ট করেছি বিজ্ঞাপন থাকার প্রশ্নই থাকেনা।
তো প্রিয় ভাই ও বোনেরা আজকের মত এ পর্যন্তই মহান আল্লাহতালা বাঁচিয়ে রাখলে ইনশাল্লাহ আবার দেখা হবে নতুন কোন পোষ্টের মাধ্যমে সবার সাথে ইনশাআল্লাহ
ততক্ষণ পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন আর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ুন। আল্লাহ হাফেজThe post প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভালোবাসার বিনিময় | I Love You Hazrat Muhammad Sallallahu Alaihi Wasallam 😻 appeared first on Trickbd.com.
from Trickbd.com https://ift.tt/n1kGbae
via IFTTT
No comments:
Post a Comment