আসসালামু আলাইকুম.
আশা করি সবাই ভালো আছেন,আর আপনাদের দোয়ায় আমিও ভালো আছি।
আজকে আবারও নতুন একটা টিপস নিয়ে হাজির হলাম
আপনাদের মাঝে আমি আসিফ।
সাইকোলজিতে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করার বিভিন্ন কৌশল রয়েছে। তার মধ্যে কিছু কৌশল নিয়ে আজকে আলোচনা করলাম। আপনি আপনার জীবনে এগুলো এপ্লাই করে দেখতে পারেন।
আমার স্মৃতিশক্তি কমে গেছে, আমি আর আগের মত মনে রাখতে পারিনা, আমি কোন কিছু পড়লে ভুলে যাই, এরকম অভিযোগ অনেকেই করে থাকেন। অনেকেই আবার তাদের বর্তমান স্মৃতিশক্তি নিয়ে সন্তুষ্ট নয় । স্মৃতিশক্তি আসলে অনেকগুলো বিষয়ের সাথে জড়িত। কোন বিষয় নিয়ে বারবার চিন্তা করলে, শারীরিকভাবে গুরুতর অসুস্থ থাকলে,কোন ট্রমার মধ্যে দিয়ে গেলে, মস্তিষ্কে আঘাত পেলে, একসাথে অনেক তথ্য মুখস্থ করার চেষ্টা করলে, কোন মানসিক সমস্যা থাকলে ব্যক্তি স্মৃতি থেকে তথ্য পুনরুদ্ধার করতে ব্যর্থ হতে পারেন। দৈহিক ও মানসিক অসুস্থতার কারণে আমরা নতুন বিষয় মুখস্থ করতে ব্যর্থ হই এবং কোন কোন ক্ষেত্রে মুখস্থ করা বিষয়ও ভুলে যাই । তাছাড়া বার্ধক্য জনিত কারণে মানুষের স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে পারে। আমাদের মস্তিষ্কের প্রতিটি স্মৃতি কতগুলো নিউরনের সংযোগে তৈরি হয়। আমরা যদি আমাদের ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে প্রথম কোন সাধারণ তথ্য পেয়ে থাকি তাহলে তা আমাদের স্মৃতিতে নিউরোনের মধ্যে একটি নতুন সংযোগ তৈরী করে। যদি ঐ তথ্য বারবার পুনরাবৃত্তি করা হয় তাহলে নিউরনগুলো মধ্যে সংযোগ শক্তিশালী হয়।
স্মৃতিশক্তির সাথে আমাদের খাদ্যের একটি নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে । কিছু খাবার যেমন, ওমেগা -3 এসিড মস্তিষ্ক এবং স্নায়ু কোষ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর এ ওমেগা -3 চর্বিযুক্ত মাছে পাওয়া যায় । আবার কিছু কিছু খাবার যেগুলো আপনার মস্তিষ্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে যেমন, চিনি, প্রক্রিয়াজাতকরণ খাবার, মাখন, লাল মাংস, ফাস্টফুড, লবণ ইত্যাদি।স্মৃতি সংক্রান্ত সমস্যা দূর করতে আমরা এসব খাবার পরিহার করে চলতে পারি । আমরা যখন কোন মানসিক চাপে থাকি তখন আমাদের ব্রেইন থেকে কর্টিসোল নামক এক ধরনের নিউরোট্রান্সমিটার ক্ষরণ হয় যেটা আমাদের স্মৃতি থেকে কোন তথ্য পুনরুদ্ধার করার ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করে। তাই চাপ মুক্ত জীবন যাপন স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে।
অনুশীলনের সাহায্যে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করা না গেলেও অনুশীলনের মাধ্যমে স্মৃতির উপাদানের (যেমন, শিখন, সংরক্ষণ,পুনরুদ্রেক, প্রত্যাভিজ্ঞা, স্থান-কাল নির্দেশ ইত্যাদি )কাজকে ত্বরান্বিত করা যায়। নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হল:
১। উচ্চারণ: কোন তথ্য মুখস্থ করার ক্ষেত্রে নিরবে পড়ার চেয়ে উচ্চারণ করে পাঠ করা অনেক ভাল। উচ্চারণের একটি বিশেষ সুবিধা হল এর ফলে চক্ষু এবং কর্ণ এ দুটি ইন্দ্রিয় সমানভাবে কাজ করে। আপনি যদি কোন কিছু শব্দ করে পড়েন তাহলে স্মৃতির নিউরনগুলো মধ্যে সংযোগ শক্তিশালী হবে এবং সেটা মনে রাখার সহজ হবে। এছাড়া ছন্দ ও সুরের মাধ্যমে পাঠ করলে তা সহজে মুখস্থ হয়
২। সামগ্রিক বনাম আংশিক পদ্ধতি: ছোট একটি তথ্য মুখস্থ করার ক্ষেত্রে অংশ অংশ ভাবে পড়ার চেয়ে সামগ্রিকভাবে পড়া উত্তম। অর্থহীন বিষয়বস্তু শেখার ক্ষেত্রে আংশিক পদ্ধতি অধিক কার্যকর
৩। বিরতি পদ্ধতি: কোন নির্দিষ্ট পাঠ মুখস্থ করার সময় মাঝে মাঝে বিরতি দিয়ে শিক্ষা লাভ করলে তথ্যগুলি স্থায়ীভাবে স্মৃতিতে সংরক্ষণের পর্যাপ্ত সময় পায় এর ফলে শিক্ষন স্থায়ী হয়
৪।অর্থ অনুধাবন: বিষয়বস্তুর অর্থ বুঝে পাঠ অভ্যাস করলে দ্রুত মুখস্থ হয়। অর্থ না বুঝে পাঠ অভ্যাস করলে মুখস্থ হতে বেশী সময় লাগে
৫। রুটিন পদ্ধতি: রুটিন অনুযায়ী পাঠ অভ্যাস করলে স্মৃতির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে
৬।সংগঠন: পাঠ করার পর যদি বিষয়বস্তু সুন্দরভাবে সাজান হয় তবে তা স্মরণ করা সহজতর হয়। এলোমেলোভাবে পাঠ করলে তা সহজে স্মরণ করা যায়না
৭।নিদ্রা পূর্বে পাঠ : নিদ্রার পূর্বে পাঠ মুখস্থ করলে তা সহজে স্মৃতিচিহ্ন থেকে বিলীন হয় না। কারণ নিদ্রায় যাওয়ার ফলে স্মৃতির চিহ্নগুলো বাধাগ্রস্ত হয় না। তাছাড়া পর্যাপ্ত ঘুম স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক
৮।গভীর মনোযোগ: স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গভীর মনোযোগ একটি শর্ত হিসেবে কাজ করে। গভীর মনোযোগ সহকারে পাঠ করলে তা সহজেই স্মরণ করা যায়
৯।Survey Q 3R : কোন বিষয়বন্তু মুখস্থকরণের ক্ষেত্রে রবিনসন এক যুগান্তকারী নিয়ম প্রণয়ন করেছেন। তার নিয়মটি Survey Q 3R পদ্ধতি নামে পরিচিত। এখানে, Survey মানে -জরিপ করা Q মানে Question – প্রশ্ন করা, Read – পড়া (R-1), Recite- আবৃত্তি (R-2) এবং Review-পর্যালোচনা(R-3)। এ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী প্রথমে বিষয়বস্তু সম্পর্কে জরিপ করে নিজে নিজে প্রশ্ন করবে এবং নিজে নিজে সে প্রশ্নগুলোর উত্তর অনুসন্ধান করবে । পড়ার সময় আবৃতি সহকারে পাঠ করবে এবং বিষয়বস্তু পড়া শেষে তা পুনরায় স্মরণ করার চেষ্টা করবে। এ রূপ প্রক্রিয়ায় একজন শিক্ষার্থী সহজেই কোন বিষয়েকে আয়ত্ত আনতে পারবে
১০।সংক্ষেপণ/মনেমোনিক্স (mnemonics): কোন তথ্য মুখস্থ করার জন্য আপনি সংক্ষেপণ/মনেমোনিক্স (mnemonics) ব্যবহার করতে পারেন। এ পদ্ধতিতে আপনি কতগুলোর শব্দ প্রথম অদ্যাক্ষর দিয়ে একটি ছোট শব্দ তৈরি করতে পারেন । যেমন: আপনাকে কতগুলি পয়েন্ট মুখস্থ করতে হবে। আপনি ওই পয়েন্ট গুলির প্রথম অদ্যাক্ষর দিয়ে একটি শব্দ বা বাক্য তৈরি করে তা খুব সহজেই মুখস্থ করতে পারেন।যেমন: ছোটবেলায় আমরা শিখেছি বেনীআসহকলা অর্থাৎ বেগুনি, নীল, আসমানী, সবুজ, হলুদ, কমলা এবং লাল। এক্ষেত্রে শব্দটি বা বাক্যটি অর্থবহ করলে ফলাফল আরো ভালো পাওয়া যায়।
উল্লিখিত কৌশল গুলো অনুসরণের মাধ্যমে আমরা আমাদের স্মৃতির উপাদানের কাজ ত্বরান্বিত করতে পারি।
যদি না বুঝতে পারেন, ১০ বার জিগ্যেস করুন। সমাধান দিতে চেষ্টা করব। টিউন লিখতে কষ্ট ফিল করি না, তাহলে Reply দিতে দ্বিধা করব কেন.!!
সবাইকে ধন্যবাদ।আজকের মতো এখানেই বিদায় নিলাম,হাজির হবো আরও নিত্য নতুন টিপস নিয়ে আমি আসিফ।
আল্লাহ হাফেজ.
The post স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর কার্যকর উপায়গুলো কী? Dont Miss!!!!!! appeared first on Trickbd.com.
from Trickbd.com https://ift.tt/Nusedzt
via IFTTT
No comments:
Post a Comment